ঢাকা ০৩:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৪ জানুয়ারী ২০২৫, ২১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গজারিয়ায় নৌ ডাকাত বাবলা বাহিনীর সশস্ত্র মহড়া ফাকা গুলিবর্ষণ

নিজস্ব সংবাদ :

রাজু আহমেদ গজারিয়া প্রতিনিধি:
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন একটি হোটেলে এক ইউপি সদস্যকে মারধর ও উপজেলা পরিষদের সামনে রাস্তায় সশস্ত্র মহড়া দিয়ে ফাঁকা গুলিবর্ষণ করেছে কুখ্যাত নৌ ডাকাত বাবলা বাহিনীর সদস্যরা। এ ঘটনায় আতঙ্কিত স্থানীয় লোকজন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও হামলায় আহত ইমামপুর ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শাহ্ আলম মোল্লা বলেন, ‘মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) দুপুর দেড়টার দিকে আমি ব্যক্তিগত কাজে গজারিয়া উপজেলা পরিষদে আসি। দুপুর দুইটার দিকে খাবার খেতে উপজেলা পরিষদের পুরাতন গেইট সংলগ্ন আল-মদিনা হোটেল এ- রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করি। ভিতরে গিয়ে দেখি দুটি টেবিলে ১৪/১৫ জন লোক বসে আছে। তারা উচ্চৈঃস্বরে কথাবার্তা বলছে এবং বিভিন্ন লোকদের গালাগালি করছে এতে আশেপাশের লোকদের সমস্যা হচ্ছে বিধায় আমি তাদের শান্ত হতে বলি। আমি জানতাম না তারা কারা। পরবর্তীতে এক লোক আমাকে মারধর করতে শুরু করে। তার দেখাদেখি আরো কয়েকজন আমাকে কিল ঘুসি মারতে থাকে। পরে আমি জানতে পারি মেঘনা নদীর কুখ্যাত নৌ ডাকাত বাবলা তার সহযোগীদের নিয়ে এখানে এসেছে। তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি আমি আমার পরিচিত লোকদের জানালে তারা আমাকে উদ্ধার করতে ছুটে আসে। অবস্থা বেগতিক দেখে নৌ ডাকাত বাবলা ও তার সহযোগীরা গজারিয়া উপজেলা পরিষদের সামনের রাস্তায় সশস্ত্র মহড়া দিয়ে নদীর পাড়ের দিকে চলে যায়। এ সময় তারা স্পিডবোটে উঠে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে আতঙ্ক তৈরি করে’।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল হক বলেন, ‘আমি তিন/চার রাউন্ড গুলির শব্দ শুনেছি। তার কিছুক্ষণ পরে দেখি দুটি স্পিডবোর্ডে করে কিছু লোক মেঘনা নদীর দিকে চলে যাচ্ছে’।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রাজিব খান বলেন, ‘শুনেছি দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলে বাবলা ডাকাত ছিল কিনা তা বলতে পারছিনা। সশস্ত্র মহড়া বা ফাঁকা গুলিবর্ষণের কোন ঘটনা আমার জানা নেই’।
বিষয়টি সম্পর্কে নৌ পুলিশের নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা বলেন, ‘বাবলা ডাকাত তার সহযোগীদের নিয়ে গজারিয়া উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন ফুলদী নদীতে স্পিডবোর্ডে করে যাওয়ার সময় কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করেছে এমন একটি খবর আমি পেয়েছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গজারিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে’।
উল্লেখ্য, মুন্সীগঞ্জ ও চাঁদপুর জেলার সীমান্তবর্তী পদ্মা ও মেঘনা নদীর মোহনা দিয়ে চলাচলকারী নৌযান চালকদের কাছে আতঙ্কের নাম নৌ ডাকাত বাবলা বাহিনী। প্রশাসনের নাকের ডগায় বিভিন্ন নৌযানে ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে তারা। বাহিনী প্রধান বাবলা ডাকাত ওরফে উজ্জ্বল খালাসীর নামে হত্যা, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধে চাঁদপুর থানায় ৮টি, মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় ২২টি, নারায়ণগঞ্জ জেলায় ৪টি ও শরীয়তপুর জেলায় ৩টি মামলা রয়েছে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৪:৫৪:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ জুলাই ২০২৪
৫৬ বার পড়া হয়েছে

গজারিয়ায় নৌ ডাকাত বাবলা বাহিনীর সশস্ত্র মহড়া ফাকা গুলিবর্ষণ

আপডেট সময় ০৪:৫৪:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ জুলাই ২০২৪

রাজু আহমেদ গজারিয়া প্রতিনিধি:
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন একটি হোটেলে এক ইউপি সদস্যকে মারধর ও উপজেলা পরিষদের সামনে রাস্তায় সশস্ত্র মহড়া দিয়ে ফাঁকা গুলিবর্ষণ করেছে কুখ্যাত নৌ ডাকাত বাবলা বাহিনীর সদস্যরা। এ ঘটনায় আতঙ্কিত স্থানীয় লোকজন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও হামলায় আহত ইমামপুর ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শাহ্ আলম মোল্লা বলেন, ‘মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) দুপুর দেড়টার দিকে আমি ব্যক্তিগত কাজে গজারিয়া উপজেলা পরিষদে আসি। দুপুর দুইটার দিকে খাবার খেতে উপজেলা পরিষদের পুরাতন গেইট সংলগ্ন আল-মদিনা হোটেল এ- রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করি। ভিতরে গিয়ে দেখি দুটি টেবিলে ১৪/১৫ জন লোক বসে আছে। তারা উচ্চৈঃস্বরে কথাবার্তা বলছে এবং বিভিন্ন লোকদের গালাগালি করছে এতে আশেপাশের লোকদের সমস্যা হচ্ছে বিধায় আমি তাদের শান্ত হতে বলি। আমি জানতাম না তারা কারা। পরবর্তীতে এক লোক আমাকে মারধর করতে শুরু করে। তার দেখাদেখি আরো কয়েকজন আমাকে কিল ঘুসি মারতে থাকে। পরে আমি জানতে পারি মেঘনা নদীর কুখ্যাত নৌ ডাকাত বাবলা তার সহযোগীদের নিয়ে এখানে এসেছে। তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি আমি আমার পরিচিত লোকদের জানালে তারা আমাকে উদ্ধার করতে ছুটে আসে। অবস্থা বেগতিক দেখে নৌ ডাকাত বাবলা ও তার সহযোগীরা গজারিয়া উপজেলা পরিষদের সামনের রাস্তায় সশস্ত্র মহড়া দিয়ে নদীর পাড়ের দিকে চলে যায়। এ সময় তারা স্পিডবোটে উঠে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে আতঙ্ক তৈরি করে’।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল হক বলেন, ‘আমি তিন/চার রাউন্ড গুলির শব্দ শুনেছি। তার কিছুক্ষণ পরে দেখি দুটি স্পিডবোর্ডে করে কিছু লোক মেঘনা নদীর দিকে চলে যাচ্ছে’।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রাজিব খান বলেন, ‘শুনেছি দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলে বাবলা ডাকাত ছিল কিনা তা বলতে পারছিনা। সশস্ত্র মহড়া বা ফাঁকা গুলিবর্ষণের কোন ঘটনা আমার জানা নেই’।
বিষয়টি সম্পর্কে নৌ পুলিশের নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা বলেন, ‘বাবলা ডাকাত তার সহযোগীদের নিয়ে গজারিয়া উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন ফুলদী নদীতে স্পিডবোর্ডে করে যাওয়ার সময় কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করেছে এমন একটি খবর আমি পেয়েছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গজারিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে’।
উল্লেখ্য, মুন্সীগঞ্জ ও চাঁদপুর জেলার সীমান্তবর্তী পদ্মা ও মেঘনা নদীর মোহনা দিয়ে চলাচলকারী নৌযান চালকদের কাছে আতঙ্কের নাম নৌ ডাকাত বাবলা বাহিনী। প্রশাসনের নাকের ডগায় বিভিন্ন নৌযানে ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে তারা। বাহিনী প্রধান বাবলা ডাকাত ওরফে উজ্জ্বল খালাসীর নামে হত্যা, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধে চাঁদপুর থানায় ৮টি, মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় ২২টি, নারায়ণগঞ্জ জেলায় ৪টি ও শরীয়তপুর জেলায় ৩টি মামলা রয়েছে।