ঢাকা ০১:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ২৪ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গজারিয়া সাপের ছোবলে নারীর মৃত্যু, চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ

নিজস্ব সংবাদ :

রাজু আহমেদ গজারিয়া প্রতিনিধি
মুন্সীগঞ্জ গজারিয়া উপজেলা সাপের-ছোবলে-নারীর-মৃত্যু-চিকিৎসায়-অবহেলার-অভিযোগ স্বজনের ভাষ্য, সাপে কাটার ২০ মিনিটের মাথায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয় জোবেদা বেগমকে (৬০)। সে সময় অ্যান্টিভেনম না দিয়ে ঢাকা পাঠিয়ে দেয়ায় তার মৃত্যু হয়। সে জন্য দায়ী চিকিৎসকের অবহেলা গজারিয়ায় সাপের ছোবলে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে, যার চিকিৎসায় অবহেলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন এক স্বজন।

তার ভাষ্য, সাপে কাটার ২০ মিনিটের মাথায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয় জোবেদা বেগমকে (৬০)। সে সময় অ্যান্টিভেনম না দিয়ে ঢাকা পাঠিয়ে দেয়ায় তার মৃত্যু হয়। সে জন্য দায়ী চিকিৎসকের অবহেলা।

প্রাণ হারানো জোবেদা গজারিয়ার টেংগারচর ইউনিয়নের বড়ইকান্দি ভাটেরচর গ্রামের ইসমাইল খন্দকারের স্ত্রী।

ওই নারীর পুত্রবধূ ও প্রত্যক্ষদর্শী রোবিনা বেগম বলেন, ‘সোমবার সন্ধ্যা ৭টা ৩ মিনিটের দিকে নিজ বাড়ির আঙিনায় তাকে সাপে কাটে। অন্ধকারে তিনি সাপটি ভালো করে দেখেননি। এ ঘটনার ২০ মিনিট পর অর্থাৎ ৭টা ২৩ মিনিটে আমরা তাকে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যাই।

‘সেখানে যাওয়ার পর জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক আমাকে জানান, হাসপাতালে সাপে কাটার ভ্যাকসিন নাই। তিনি যত দ্রুত সম্ভব আমাদের ঢাকা চলে যেতে বলেন। টাকা পয়সা এবং গাড়ি ম্যানেজ করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যেতে যেতে আমাদের রাত দশটা বেজে যায়। সেখানে যাওয়ার পর সাড়ে ১০টার দিকে আমার শাশুড়ি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।

‘আমার শাশুড়ির মৃত্যুর জন্য গজারিয়া উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক দায়ী। তিনি সময়মতো ভ্যাকসিন দিলে তাকে হয়তো বাঁচানো যেত।’

বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুমাইয়া ইয়াকুব বলেন, ‘হাসপাতালের রেজিস্টার অনুযায়ী রোগীকে সন্ধ্যা সাতটা চল্লিশ মিনিটে আমাদের হাসপাতালে আনা হয়। তাকে যে অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছিল সে অবস্থায় তাকে অ্যান্টিভেনম দেয়া সম্ভব ছিল না। তার আইসিইউ সাপোর্টসহ উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন ছিল।

‘আমরা সে জন্য তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা পাঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। আমাদের হাসপাতালে পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম মজুত রয়েছে। চিকিৎসক তাকে আন্তরিকতার সাথে সেবা দিয়েছেন। এখানে তার কোনো গাফিলতি ছিল না।’

বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার ওসি রাজিব খান বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত রয়েছি। এ ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি।’

জানতে চাইলে গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কোহিনূর আক্তার বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত রয়েছি। এখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোনোঅবহেলা আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হবে।’

মুন্সীগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন মঞ্জুরুল আলম বলেন, ‘উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। আমি শুনেছি হাসপাতালে যখন নিয়ে আসা হয়, তখন রোগীর অবস্থা খুব খারাপ ছিল। তারপরও বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখব।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৮:০৩:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই ২০২৪
১২০ বার পড়া হয়েছে

গজারিয়া সাপের ছোবলে নারীর মৃত্যু, চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ

আপডেট সময় ০৮:০৩:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই ২০২৪

রাজু আহমেদ গজারিয়া প্রতিনিধি
মুন্সীগঞ্জ গজারিয়া উপজেলা সাপের-ছোবলে-নারীর-মৃত্যু-চিকিৎসায়-অবহেলার-অভিযোগ স্বজনের ভাষ্য, সাপে কাটার ২০ মিনিটের মাথায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয় জোবেদা বেগমকে (৬০)। সে সময় অ্যান্টিভেনম না দিয়ে ঢাকা পাঠিয়ে দেয়ায় তার মৃত্যু হয়। সে জন্য দায়ী চিকিৎসকের অবহেলা গজারিয়ায় সাপের ছোবলে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে, যার চিকিৎসায় অবহেলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন এক স্বজন।

তার ভাষ্য, সাপে কাটার ২০ মিনিটের মাথায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয় জোবেদা বেগমকে (৬০)। সে সময় অ্যান্টিভেনম না দিয়ে ঢাকা পাঠিয়ে দেয়ায় তার মৃত্যু হয়। সে জন্য দায়ী চিকিৎসকের অবহেলা।

প্রাণ হারানো জোবেদা গজারিয়ার টেংগারচর ইউনিয়নের বড়ইকান্দি ভাটেরচর গ্রামের ইসমাইল খন্দকারের স্ত্রী।

ওই নারীর পুত্রবধূ ও প্রত্যক্ষদর্শী রোবিনা বেগম বলেন, ‘সোমবার সন্ধ্যা ৭টা ৩ মিনিটের দিকে নিজ বাড়ির আঙিনায় তাকে সাপে কাটে। অন্ধকারে তিনি সাপটি ভালো করে দেখেননি। এ ঘটনার ২০ মিনিট পর অর্থাৎ ৭টা ২৩ মিনিটে আমরা তাকে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যাই।

‘সেখানে যাওয়ার পর জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক আমাকে জানান, হাসপাতালে সাপে কাটার ভ্যাকসিন নাই। তিনি যত দ্রুত সম্ভব আমাদের ঢাকা চলে যেতে বলেন। টাকা পয়সা এবং গাড়ি ম্যানেজ করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যেতে যেতে আমাদের রাত দশটা বেজে যায়। সেখানে যাওয়ার পর সাড়ে ১০টার দিকে আমার শাশুড়ি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।

‘আমার শাশুড়ির মৃত্যুর জন্য গজারিয়া উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক দায়ী। তিনি সময়মতো ভ্যাকসিন দিলে তাকে হয়তো বাঁচানো যেত।’

বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুমাইয়া ইয়াকুব বলেন, ‘হাসপাতালের রেজিস্টার অনুযায়ী রোগীকে সন্ধ্যা সাতটা চল্লিশ মিনিটে আমাদের হাসপাতালে আনা হয়। তাকে যে অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছিল সে অবস্থায় তাকে অ্যান্টিভেনম দেয়া সম্ভব ছিল না। তার আইসিইউ সাপোর্টসহ উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন ছিল।

‘আমরা সে জন্য তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা পাঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। আমাদের হাসপাতালে পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম মজুত রয়েছে। চিকিৎসক তাকে আন্তরিকতার সাথে সেবা দিয়েছেন। এখানে তার কোনো গাফিলতি ছিল না।’

বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার ওসি রাজিব খান বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত রয়েছি। এ ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি।’

জানতে চাইলে গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কোহিনূর আক্তার বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত রয়েছি। এখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোনোঅবহেলা আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হবে।’

মুন্সীগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন মঞ্জুরুল আলম বলেন, ‘উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। আমি শুনেছি হাসপাতালে যখন নিয়ে আসা হয়, তখন রোগীর অবস্থা খুব খারাপ ছিল। তারপরও বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখব।