ঢাকা ০৪:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৪ জানুয়ারী ২০২৫, ২১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গজারিয়ায় চিকিৎসায় ছুটি চেয়ে পেলেন না বুকে ব্যথা নিয়ে মৃত্যুবরণ

নিজস্ব সংবাদ :

রাজু আহমেদ, গজারিয়া প্রতিনিধি:

ছিল হার্টের সমস্যা। তীব্র বুক ব্যথা নিয়ে কয়েকদিন অফিস করার পর ছুটি চেয়েও ছুটি পাননি মুন্সীগঞ্জ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এক অফিস সহায়ক। ছুটি না দিয়ে উল্টো তাকে অপমান, অপদস্থ করা হয়। অবশেষে গতকালে বুধবার অসুস্থ শরীর নিয়ে অফিসে যাওয়ার পথে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। নিহত কর্মচারীর নাম মিজানুর রহমান (৪৪)। তিনি গজারিয়া উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের বেরু মোল্লাকান্দি গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে। মুন্সীগঞ্জ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি।

খবর নিয়ে জানা যায়, ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত মিজান তিন সন্তানের জনক। আট বছর বয়সি ছেলে মামুন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। দুই মেয়ের মধ্যে মীমের বয়স ছয় ও সাবিহার বয়স তিন বছর। গত প্রায় ১৬ বছর ধরে তিনি মুন্সীগঞ্জ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যালয়ে গজারিয়া আমলী আদালতে অফিস সহায়ক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এই আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাজমিন

আক্তার ছুটিতে থাকায় বর্তমানে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শহিদুল ইসলাম অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে এই কোর্টের বিচারকার্য পরিচালনা করেছিলেন। সম্প্রতি মিজানের হার্টের সমস্যা ধরা পড়ে।

গত কয়েকদিন ধরে তিনি বুক ব্যথায় ভুগছিলেন। নিহতের স্ত্রী ফাতেমাতুজ জোহরা বলেন, ‘আমার স্বামী গত কয়েকদিন ধরে অসুস্থ। গত পরশুদিন থেকে তিনি বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন। আমি তাকে ছুটি আনার জন্য বলি। অসুস্থতার কারণে মঙ্গলবার তিনি অফিসে যেতে কিছুটা দেরি করেন। এ কারণে তাকে অফিসের বাহিরে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। এরপর স্যার তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে ৮ তলা থেকে লাথি মেরে নিচে ফেলে দেওয়ার কথা বলে। চামড়া ছিলে লবণ লাগিয়ে দেওয়া হবে বলা হয়। অসুস্থ হলেও ছুটি দেওয়া হবে না জানিয়ে অসুস্থ শরীর নিয়ে অফিস করতে হবে বলে তাকে জানানো হয়। আজকে আমার স্বামী অফিসে যাওয়ার পথে অসুস্থ হয়ে রাস্তায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।’ বিষয়টি সম্পর্কে টঙ্গীবাড়ী থানা আমলী আদালতের বেঞ্চ সহকারী রুবেল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনায় আজ সকাল ১০টা থেকে তৃতীয় এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা কর্মবিরতি পালন করছে। আমরা কথাবার্তা বলে পরবর্তী করণীয় ঠিক করব।’

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৭:৫০:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
৩২ বার পড়া হয়েছে

গজারিয়ায় চিকিৎসায় ছুটি চেয়ে পেলেন না বুকে ব্যথা নিয়ে মৃত্যুবরণ

আপডেট সময় ০৭:৫০:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

রাজু আহমেদ, গজারিয়া প্রতিনিধি:

ছিল হার্টের সমস্যা। তীব্র বুক ব্যথা নিয়ে কয়েকদিন অফিস করার পর ছুটি চেয়েও ছুটি পাননি মুন্সীগঞ্জ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এক অফিস সহায়ক। ছুটি না দিয়ে উল্টো তাকে অপমান, অপদস্থ করা হয়। অবশেষে গতকালে বুধবার অসুস্থ শরীর নিয়ে অফিসে যাওয়ার পথে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। নিহত কর্মচারীর নাম মিজানুর রহমান (৪৪)। তিনি গজারিয়া উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের বেরু মোল্লাকান্দি গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে। মুন্সীগঞ্জ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি।

খবর নিয়ে জানা যায়, ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত মিজান তিন সন্তানের জনক। আট বছর বয়সি ছেলে মামুন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। দুই মেয়ের মধ্যে মীমের বয়স ছয় ও সাবিহার বয়স তিন বছর। গত প্রায় ১৬ বছর ধরে তিনি মুন্সীগঞ্জ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যালয়ে গজারিয়া আমলী আদালতে অফিস সহায়ক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এই আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাজমিন

আক্তার ছুটিতে থাকায় বর্তমানে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শহিদুল ইসলাম অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে এই কোর্টের বিচারকার্য পরিচালনা করেছিলেন। সম্প্রতি মিজানের হার্টের সমস্যা ধরা পড়ে।

গত কয়েকদিন ধরে তিনি বুক ব্যথায় ভুগছিলেন। নিহতের স্ত্রী ফাতেমাতুজ জোহরা বলেন, ‘আমার স্বামী গত কয়েকদিন ধরে অসুস্থ। গত পরশুদিন থেকে তিনি বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন। আমি তাকে ছুটি আনার জন্য বলি। অসুস্থতার কারণে মঙ্গলবার তিনি অফিসে যেতে কিছুটা দেরি করেন। এ কারণে তাকে অফিসের বাহিরে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। এরপর স্যার তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে ৮ তলা থেকে লাথি মেরে নিচে ফেলে দেওয়ার কথা বলে। চামড়া ছিলে লবণ লাগিয়ে দেওয়া হবে বলা হয়। অসুস্থ হলেও ছুটি দেওয়া হবে না জানিয়ে অসুস্থ শরীর নিয়ে অফিস করতে হবে বলে তাকে জানানো হয়। আজকে আমার স্বামী অফিসে যাওয়ার পথে অসুস্থ হয়ে রাস্তায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।’ বিষয়টি সম্পর্কে টঙ্গীবাড়ী থানা আমলী আদালতের বেঞ্চ সহকারী রুবেল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনায় আজ সকাল ১০টা থেকে তৃতীয় এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা কর্মবিরতি পালন করছে। আমরা কথাবার্তা বলে পরবর্তী করণীয় ঠিক করব।’